চা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান:
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান:
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৪ জুন ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দ হতে ২৩ অক্টোবর ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত প্রথম বাঙালি হিসাবে চা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত থেকে বাঙালি জাতিকে সম্মানিত করেন।
বঙ্গবন্ধু চা বোর্ডের চেয়ারম্যান থাকাকালীন ১১১-১১৩, মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকায় সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত ০.৩৭১২ একর ভূমির ওপর চা বোর্ডের প্রধান কার্যালয় নির্মাণ কাজ ত্বরান্বিত হয়।
তিনি ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত টি রিসার্চ স্টেশনের গবেষণা কার্যক্রম জোরদার করে উচ্চ ফলনশীল জাতের (ক্লোন) চা গাছ উদ্ভাবনের নির্দেশনা প্রদান করেন।
চায়ের উচ্চফলন নিশ্চিত করতে সর্বপ্রথম বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে চট্টগ্রামের কর্ণফুলি এবং শ্রীমঙ্গলস্থ ভাড়াউড়া চা বাগানে উচ্চফলনশীল জাতের চারা রোপণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
তিনি ১৯৫৭-১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত টি রিসার্চ স্টেশনে ল্যাবরেটরি ও লাইব্রেরি স্থাপনের মাধ্যমে চা গবেষণা কার্যক্রম জোরদারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
তিনি “টি অ্যাক্ট-১৯৫০” সংশোধনের মাধ্যমে চা বোর্ডের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড (সিপিএফ) চালু করেছিলেন যা এখনও চালু রয়েছে।
বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পর “বাংলাদেশ টি ইন্ডাস্ট্রিজ ম্যানেজমেন্ট কমিটি (BTIMC)” গঠন করে যুদ্ধোত্তর মালিকানাবিহীন/পরিত্যাক্ত চা বাগান পুনর্বাসন করার পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এছাড়াও যুদ্ধে বিদ্ধস্ত পরিত্যক্ত বাগানগুলোকে বাগান মালিকদের নিকট পূনরায় হস্তান্তরের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ধ্বংসপ্রাপ্ত চা কারখানাগুলো পুনর্বাসনের জন্য “ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া” থেকে ঋণ গ্রহণ করতঃ চা শিল্পের যন্ত্রপাতি আমদানির ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
চা শিল্পের অস্তিত্ব রক্ষায় বঙ্গবন্ধুর সরকার চা উৎপাদনকারীদের নগদ ভর্তুকি প্রদান করার পাশাপাশি ভর্তুকি মূল্যে সার সরবরাহের ব্যবস্থা করেন। উক্ত সার সরবরাহ কার্যক্রম এখনো অব্যাহত আছে।
তিনি চা শ্রমিকদের শ্রমকল্যাণ; যেমন-বিনামূল্যে বাসস্থান, সুপেয় পানি সরবরাহ, বেবি কেয়ার সেন্টার, প্রাথমিক শিক্ষা এবং রেশন প্রাপ্তি নিশ্চিত করেন।
তিনি ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশ টি রিসার্চ স্টেশনকে পূর্ণাঙ্গ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটে উন্নীত করেন। বর্তমানে তা বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (BTRI) নামে পরিচিত।